• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১৩ জুলাই, ২০২৩
সর্বশেষ আপডেট : ১৩ জুলাই, ২০২৩

সদর হাসপাতালে ১২ দিনে হাসপাতালে ভর্তি ৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী

উপজেলা প্রতিনিধি, সদর : সারাদেশের মতো নোয়াখালীতেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ১২ দিনে জেলা সদর হাসপাতালে ৩৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে ৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বুধবার (১২ জুলাই) বিকেলে জেলা সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ২ জন ভর্তি হয়েছেন এবং গত ১২ দিনে জেলা সদর হাসপাতালে ৩৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে ৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমাদের মূল ভবন এখনও নির্মাণকাজ চলমান থাকায় আমরা কিছুটা সংকটের মধ্যে আছি। তবে আমাদের আলাদা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের জন্য ইউনিট রয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের সেবায় আমাদের ওষুধ পর্যাপ্ত রয়েছে এবং প্রত্যেক রোগীকেই পৃথক মশারি দেওয়া হচ্ছে।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের ৫নং ওয়ার্ডে গিয়ে কথা হয় ডেঙ্গু জ্বরের আক্রান্ত পুষ্প আক্তারের (২৯) সাথে। তিনি বলেন, নিজ বাড়ি নোয়াখালী জেলার সদর উপজেলার হাসান হাটে হলেও স্বামী মো. মানিকের চাকরির সুবাদে দুই সন্তান নিয়ে ঢাকার মিরপুর বসবাস করেন তারা। ঈদুল আযহা উপলক্ষে ঈদের পরদিন পরিবার ও স্বজনদের সাথে দেখা করতে ঢাকা থেকে নোয়াখালী আসেন পুষ্প আক্তার। নোয়াখালী আসার পর দিন থেকেই আমার শরীরে হালকা জ্বর ও মাথাব্যথা ছিল। শুরুতেই গ্রাম ডাক্তারের চিকিৎসা নিলেও জ্বর বাড়তে থাকলে গত ৪ জুলাই ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হই। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে বলে জানতে পারি এবং এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছি। তার সুস্থ হতে আরো দুই-তিন দিন লাগতে পারে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে আমি সন্তুষ্ট ।

রোগীর স্বজনরা জানান, হাসপাতালে প্রায় ছয় থেকে সাত দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর অধিকাংশ রোগী সুস্থ হচ্ছেন। হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সদের সহযোগিতা নিয়েও খুশি তারা।

পুষ্প আক্তারের স্বামী মো. মানিক বলেন, আমার স্ত্রীর জ্বর নিয়ে এখানে ভর্তি করায়। এখন পর্যন্ত চিকিৎসক ও নার্সরা আন্তরিকতার সাথে আমাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কোন মেডিসিন ও বাইরে থেকে আনতে হয়নি। হাসপাতাল থেকেই সব দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে এডিস মশার লার্ভা নিধনে নোয়াখালী পৌরসভা থেকে স্প্রে করা হচ্ছে। প্রত্যেক কাউন্সিলরকে এ নিয়ে জনগণকে সচেতন করার জন্য নির্দেশনা রয়েছে। মাইকিং ও লিফলেটের মাধ্যমে জনগণের উদ্দেশ্যে সচেতনতামূলক পরামর্শ প্রচারণা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল বলেন, সারা দেশেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।এডিশ মশার লার্ভা নিধনে ওষুধ স্প্রে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মাইকিং ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, ডেঙ্গু মশাবাহিত ও ভাইরাস জনিত রোগ। এ রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিয়ে সুস্থতার চেয়ে অধিকতর হচ্ছে সচেতন থাকা। সারাদেশের মতো নোয়াখালীতেও ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। আমাদের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা ডেঙ্গু রোগীদের আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। অবহেলা করা যাবে না কেবল সচেতন হতে হবে। কোথাও যেন জমানো পানি না থাকে সেদিকে নজর রাখতে।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি করেছি। পাশাপাশি মানুষকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। শুধু ওষুধ ছিটিয়ে মশা নিধন সম্ভব নয়, এজন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা। নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ববোধ থাকতে হবে। নিজের সচেতনতার পাশাপাশি প্রতিবেশীকেও সচেতন করতে হবে।

আরও পড়ুন