• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর, ২০২৩
সর্বশেষ আপডেট : ২৬ নভেম্বর, ২০২৩

কমিশন বানিজ্যে শতভাগ সর্বনাশ! সোনাইমুড়ীতে ঠিকাদারের সেচ্ছাচারিতা, সুভঙ্করের ফাঁকি

মোশাররেফ হোসেন সুমন, উপজেলা প্রতিনিধি, সোনাইমুড়ী : সোনাইমুড়ী উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অধিন গ্রামিক সড়ক নির্মানে এগচ-৩ অধিন প্রকল্প সমূহের সকল কাজেই ঠিকাদারের সেচ্ছাচারিতা, সুভঙ্করের ফাঁকি, ব্যাপক অনিয়ম, কারচুপি, দুর্নীতি’র অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামিন রাস্তা সংস্কার, নির্মানে সরকারি দরপত্রে বর্ণিত ও কার্যাদেশ মোতাবেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চুক্তি মতে যে নির্মান সামগ্রী (ইট, খোয়া, বালি, পাথর ইত্যাদি) বিধি মোতাবেক ব্যবহারের কথা নির্দেশনা থাকলেও অফিস কমিশন বাণিজ্য ও উর্ধমহলের বকশিস বাণিজ্যে কাজের স্থলে সুভঙ্করের ফাঁকি ছাড়া কিছুই নেই। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সমূহ নাম সর্বস্ব ও দায় সারা মাধ্যমে ১০০% কাজের স্থলে সর্বোচ্চ ৪০% থেকে ৫০% কাজের মাধ্যমে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব দেখার কেউ আছে বলে মনে হয়না !

অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), নির্বাহী প্রকৌশলী, নোয়াখালী ও সহকারি প্রকৌশলী সোনাইমুড়ী অফিসের কতেক অসাধুকর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১৫% কমিশনের বিনিময়ে ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদেরকে টাকার বিনিময় ম্যানেজ করে রাস্ট্রের অর্থের শতভাগ লুটেপুটে, সর্বনাশ করছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সমূহের স্বত্বাধিকারীদের বেশির ভাগই সরকার দলীয় হওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাবে এহেন জবাবদিহিতাহীন দায় সারা গোচের কাজ করে জনগনের রাজস্বের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ যেখানেই রয়েছে সেখানেই সোনাইমুড়ীসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা তথাকথিক ফেইজবুক ইউটিউব চ্যানেলের ভুয়া সাংবাদিকদেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টাকা দিয়ে ৫’শ থেকে ১ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করে। এর ফলে তথা কথিত ভুয়া সাংবাদিকরা নোয়াখালী এলজিইডি বিভাগকে ঘিরে চাঁদাবাজি, ধান্দাবাজির বিশাল চক্র গড়ে উঠেছে।

সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, গত অর্থ বছরে নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে গ্রেটার নোয়াখালী প্রকল্প এগচ-৩ অধিন নাটেশ্বর ইউনিয়নের ঘোষকামতা খেজুরতলা হইতে ঘোষকামতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫শ ৫০ মিটার রাস্তা পাকা করনে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ওই কাজের প্রাক্কলিত দরপত্র মূল্য ৫% অবঃ হারে ৪৯,৬০,৮১৭ (উনপঞ্চাশ লাখ ষাট হাজার আট শত সতের টাকা) এবং রাস্তায় পরিত্যাক্ত ইট, ইত্যাদি অফসারন বাবদ ১,৬৫,৩৮৫ টাকা ধার্য করা হয় এই প্রকল্পের কাজ ভাগিয়ে মেসার্স ব্রিক্সম্যানুঃ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ পাওয়ার পর ১৬-০৮-২০২২ তারিখে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠার চুক্তি সম্পূর্ন করলেও গত ১৫ দিন আগে কাজ শুরু করে। অথচ চুক্তি মোতবেক ২৩-০৬-২০২৩ তারিখে মধ্যে প্রকল্পের কাজটি সম্পূর্ন করা কথা ছিল।

এসুযোগে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়কের বক্স কাটার পর বেডে যথাযথ এবং আর এ স্যান্ড ফিলিং করার সময় রোলার ব্যবহার ও রোলিং কাজ না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্রিক ফিল্ডের পরিত্যাক্ত খোয়ারাবিস ব্যবহার করে রাস্তার ম্যাকার্ডম কাজ শেষ করে তড়ি ঘড়ি নিন্ম মানের পাথর ও বিট ুমিন ব্যবহার করেছে। পাথর ও বিটু মিনের মিশ্রনের ফলে ১৭০ ডিগ্রি সেন্টি গ্রেড তাপ মাত্রায় রাস্তায় পাথর বিছানোর বিধি নিয়ম থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ন স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাপ মাত্রায় ব্যবহার করে রাস্তার কাজ সম্পান্ন করে। যা ১দিনেই হাতের মুঠে চলে আসে। এসব অনিয়মের বিষয়ে স্থানীয় একাধিক ঠিকাদার বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরের কর্মকর্তারা ১৫% কমিশন ছাড়া ফাইল সই করেনা, যে কারনে ঠিকাদাররা সঠিক ভাবে কাজ সমাপ্ত করতে পারে না। রাস্তায় কার্পেটিং কাজ করার সময় দেখা যায় রাস্তায় পিছ ঢালাইয়ের আগে খোয়া-কনা পাথরের উপর নির্ধারিত পরিমানে পিছ দেওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছেনা। সরেজমিনে গেলে এসব অনিয়ম কারচুপির অভিযোগ তুলে ধরেন স্থানীয়রা।

এব্যপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক খোরশেদ আলম সাংবাদিকদের জানান, আপনারা লিখে কোন কাজ হবে না! চীপ ইঞ্জিনিয়ার পর্যন্ত আমার হাত রয়েছে। প্রকল্পটি আমি নিজে ততবির করে মন্ত্রণালায় ও চীফ ইঞ্জিনিয়ার কার্যালয় হতে পাস করিয়েছি। এতে আমার প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ পড়েছে। এর বাহিরে স্থানীয় অফিস ও রাজনৈতিক নেতাদেরকেও খুশি করার খরচ আলাদা রয়েছে। এখানে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার কাজটি শুধু মাত্র দেখাশুনা ছাড়া অন্য কোন ক্ষমতা নেই। ইঞ্জিনিয়ার অফিসের কার্য সহকারীর উপস্থিতিতে কাজ হয় তাকেও দৈনিক ১০ হাজার টাকা সম্মানি দিতে হয়। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে খোরশেদ আলম বলেন, এবার আপনারাই বলুন এতো খরচ করে কত % কাজ করাযায়। নিন্ম মানের কাজ না করলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লস হবে। এবিষয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিককে বারবার মুঠো ফোনে কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। এব্যাপারে একাধিক সূত্র থেকে জানা যায় কালাম ব্রিক্স ম্যানঃ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারি রাষ্ট্রীয় কোন বিশেষ ব্যাক্তির কল ছাড়া অন্য কারো কল রিসিভ করেন না।

এঘটনায় সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রকৌশলী ইমদাদুল হক বলেন, বিভিন্ন চলমান উন্নয়ন কাজে অনিয়ম যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য ও কাজ তদারকির জন্য ২-৩ জন কে প্রতিনিয়ত দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন