• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩
সর্বশেষ আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

নোয়াখালী-১ স্বতন্ত্র প্রার্থী নৌকায়, উত্তাপহীন ভোটের মাঠ

নিজস্ব প্রতিবেদন : নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী নৌকার পক্ষে ভোটের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে উত্তাপহীন হয়ে গেছে ভোটের মাঠ। স্থানীয় ভোটাররা মনে করছেন এখানে নৌকার বিজয় সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

গত ১৭ ডিসেম্বর (রোববার) এই আসনে উত্তাপ ছড়ানো প্রধানমন্ত্রীর সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী মো. জাহাঙ্গীর আলম দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাখিল করা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এর আগে পর্যন্ত এখানকার ভোটাররা মনে করেছিলের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এইচ এম ইব্রাহিম ও মো. জাহাঙ্গীর আলমের মাঝে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর প্রধানমন্ত্রীর সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী মো. জাহাঙ্গীর আলম ১৯ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) বিকেলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এইচএম ইব্রাহিমকে সাথে নিয়ে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন বলে জানিয়েছেন মো. জাহাঙ্গীর আলম। এসময় তিনি সকলকে নৌকার পক্ষে একসাথে কাজ করার অনুরোধ জানান।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলমকে ঘিরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে বিগত কয়েকদিন সাংগঠনিক যে বিভাজনে দেখা দিয়েছিলো তা এখন অনেকাংশেই দূর হয়ে গেছে।

স্থানীয় নবীন এক ভোটার আজাদ মিজি। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাঠে বিএনপিসহ শক্ত কোনো বিরোধীদল না থাকা, আ.লীগের প্রায় সব নেতাদের একসাথে নৌকার পক্ষে কাজ করার কারণে এই আসনের নির্বাচনে প্রতিযোগিতামূলক আমেজ নেই বললেই চলে। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র হেভিওয়েট প্রার্থীর প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের আগেও এখানে নির্বাচনের একটা আমেজ ছিল। আমরা ধারণা করছি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এইচএম ইব্রাহিম সহজভাবেই ৩য় মেয়াদে এমপি হবেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা থাকলে তরুণ ভোটাররা তাদের ভোটধিকার প্রয়োগে আরো স্বতঃস্ফূর্ত থাকতো এবং নির্বাচিত সাংসদেরাও তাদের দায়িত্ব পালনের ব্যাপারেও আরো সচেতন হতো হয়তো।’

ভোটের মাঠে নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার রুহুল আমীন টিকে থাকলেও তাকে ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কিংবা সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ করা যাচ্ছে না।

আসনটিতে মোট ৮ জন প্রার্থী থাকলেও নৌকা প্রতীকের বাহিরে ঈগল প্রতীকের খন্দকার রুহুল আমীনই কিছুটা পরিচিত। খন্দকার রুহুল আমীন স্থানীয় সোনাইমুড়ী উপজেলার সদ্য পদত্যাগকারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা। ভোটের মাঠে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকলে তিনি নৌকার প্রার্থী এইচএম ইব্রাহিমের সাথে একটি অসম প্রতিযোগিতা থাকতে পারেন বলেই মনে করছেন ভোটাররা।

নোয়াখালী- ১ আসনে এই ২ জনের বাহিরে অন্য ৬ জন প্রার্থী হচ্ছেন, গণফ্রন্টের মোঃ খোরশেদ আলম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ এর ইঞ্জিনিয়ার হারুন অর রশিদ সুমন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোঃ শাহ আলম, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মোঃ মমিনুল ইসলাম, তরিকত ফেডারেশনের একেএম সেলিম ভূঁইয়া, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুক। ভোটের মাঠে এই ৬ জনই তাদের সাধ্য মতো প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের প্রায় সকল নেতারা একসাথ হওয়ার পরও এই নির্বাচনকে সহজভাবে নিতে রাজী নয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এইচএম ইব্রাহিম। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাঠে কোনো প্রার্থীকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। ভোটারদেরকে নৌকার প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য বিগত দুই মেয়াদে এলাকায় উন্নয়নের পাশাপাশি সকলের নিয়মিত খোঁজ-খবর রেখেছি, এখনো রাখছি। আমি বিগত সময়ে ভোটারদের কাছে যতবার গিয়েছি, স্বাধীনতার পর আর কোনো সংসদ সদস্য এতোবেশি এলাকায় ঘোরবার নজির নেই। আমি শুধু ভোটারদের ভোটই নয়, তাদের মনকেও জয় করে নির্বাচনে জিততে চাই।’

নোয়াখালী-১ আসনটি চাটখিল উপজেলা ও সোনাইমুড়ি উপজেলা (আংশিক) নিয়ে গঠিত। আসনটিতে মোট ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১২৯ টি এবং মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লক্ষ ৯০ হাজার ৩৭৫ জন।

আরও পড়ুন