• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১ জানুয়ারি, ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট : ১ জানুয়ারি, ২০২৪

স্বাগত ২০২৪

মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা বা অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা’…রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এভাবেই নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছেন। আজ ১ জানুয়ারি। ঘড়ির কাঁটা ১২টা অতিক্রমের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে নতুন বর্ষ গণনা। কালের গর্ভে হারিয়ে গেলো আরও একটি বছর, বিদায় ইংরেজি ২০২৩, স্বাগত ২০২৪। হ্যাপি নিউ ইয়ার (শুভ নববর্ষ)।

বিদায়ী বছর ২০২৩ সালের সব দুঃখ-বেদনা ভুলে গিয়ে এবং নতুন বছরের নতুন আশা-আকাঙ্ক্ষা ও উদ্দীপনা নিয়ে বিশ্ববাসীর সঙ্গে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে মধ্যরাতে নতুন বছরকে বরণ করে নিলো পুরো জাতি। সব শ্রেণিপেশার মানুষ, বিশেষ করে যুব সমাজ মধ্যরাতে ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে নববর্ষ বরণের বিভিন্ন কর্মসূচি উদযাপনে মেতে ওঠে।

নতুন বছর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নতুন বছর-২০২৪ উপলক্ষে রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, সময়ের চিরায়ত আবর্তনে নববর্ষ নতুন স্বপ্ন, নতুন অনুপ্রেরণা নিয়ে আমাদের মাঝে সমাগত। নতুনকে বরণ করা মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। তাইতো নববর্ষকে বরণ করতে বিশ্বব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছরে অমিত সম্ভাবনার পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাক- খ্রিস্টীয় নববর্ষে এই প্রত্যাশা করে সাহাবুদ্দিন বলেন, নববর্ষ সবার মাঝে জাগিয়ে তুলে নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। খ্রিস্টীয় নববর্ষ সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ ও কল্যাণ।

শুভেচ্ছা বাণীতে শেখ হাসিনা বলেন, নতুন বছরে মানুষে-মানুষে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও জোরদার হোক, সব সংকট দূরীভূত হোক, সব সংকীর্ণতা পরাভূত হোক এবং সবার জীবনে আসুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি- এ প্রার্থনা করি।

যেভাবে এলো ইংরেজি নববর্ষ-

বিশ্বব্যাপী পালিত নানা জাতিগোষ্ঠীর উৎসবগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রাচীন হিসেবে মনে করা হয় বর্ষবরণ উৎসবকে। তাই বর্ষবরণের এই প্রাচীনতা ঐতিহ্যের ধারক। পৃথিবীর সব দেশ ও জাতির মধ্যেই নববর্ষ পালনের রীতি বিদ্যমান। আন্তর্জাতিকভাবে খ্রিষ্টীয় বা ইংরেজি নববর্ষ পালনের গুরুত্ব অপরিসীম। এভাবেই ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে আবারও চলে এলো নতুন একটি বছর। থার্টি ফার্স্ট নাইট বা ইংরেজি নববর্ষের প্রথম প্রহরে উৎসব উদযাপনে মেতেছে গোটা বিশ্ব। কিন্তু এই ইংরেজি নববর্ষ এলো কীভাবে?

জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে শুরু হয় নতুন বছর আধুনিক গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ও জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী। খ্রিষ্টপূর্ব ২০০০ অব্দে ইংরেজি নতুন বছর উদ্‌যাপনের ধারণাটি আসে, তখন মেসোপটেমিয় সভ্যতার (বর্তমান ইরাক) লোকেরা নতুন বছর উদ্‌যাপন শুরু করে। তারা তাদের নিজস্ব গণনা বছরের প্রথম দিন নববর্ষ উদ্‌যাপন করত।

খ্রিষ্টপূর্ব ১৫৩ সালে রোমে নতুন বছর পালনের প্রচলন শুরু হয়। পরে খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ অব্দে সম্রাট জুলিয়াস সিজার একটি নতুন বর্ষপঞ্জিকার প্রচলন করেন। যা জুলিয়ান ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত। রোমে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের অন্তর্গত বছরের প্রথম দিনটি জানুস দেবতার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়। জানুস প্রবেশপথ বা সূচনার দেবতা। তার নাম অনুসারেই বছরের প্রথম মাসের নাম জানুয়ারি করা হয়।

এগুলো যিশুর জন্মের আগের কথা। তবে যিশু খ্রিষ্টের জন্মের পর তার জন্মের বছর গণনা করে ১৫৮২ সালে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি ক্যালেন্ডারের নতুন সংস্কার করেন। যা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত। বর্তমানে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই কার্যত দিনপঞ্জি হিসেবে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন বছর পালন শুরু হয় ১৯ শতক থেকে। নতুন বছরের আগের দিন অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর হচ্ছে ‘নিউ ইয়ার ইভ’। এদিন নতুন বছরের আগমনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিরাজ করে উৎসবমুখর পরিবেশ।

যদিও ইংরেজি নতুন বর্ষ পালনে ব্যতিক্রমও রয়েছে। যেমন- ইসরায়েল দেশটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করলেও ইংরেজি নববর্ষ পালন করে না। আবার কিছু দেশ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারকে গ্রহণই করেনি। এদের মধ্যে আছে ইরান, ইথিওপিয়া, আফগানিস্তান সৌদি আরব, নেপাল। এসব দেশও ইংরেজি নববর্ষ পালন করে না।

আরও পড়ুন