• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩ জানুয়ারি, ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট : ৩ জানুয়ারি, ২০২৪

নৌকায় ভোট দিলে এলাকা থেকে বিতাড়িত করার ঘোষণা আওয়ামী লীগ সভাপতির

উপজেলা প্রতিনিধি, বেগমগঞ্জ : নৌকায় ভোট দিলে ভোটারদের চেঁচি (পিষে) ফেলার ঘোষণা দিয়েছেন নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. এবিএম জাফর উল্যাহ। সোমবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে কাদিরপুর ইউনিয়নে এক উঠান বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৪৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওতে ডা. এবিএম জাফর উল্যাহ বলেন, আজকে কাদিরপুর ইউনিয়নের গণসংযোগের শেষ দিন। সমাপনী দিনে আপনাদের বলছি কাদিরপুরের একটা লোক যদি ডান বাম করেন তাদের খেদাই (তাড়িয়ে) দিবেন। যেগুলো ওরে (নৌকায়) ভোট দিবে মনে করবেন তাদের কাদিরপুর থাকার অধিকার নাই। তাড়িয়ে দিবেন এখান থেকে। আছে দুই একটা কালসাপ আছে। এদের চিহ্নিত করে নির্বাচনের দিন চেঁচি (পিষে) দিবেন।

এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের মিনহাজ আহমেদ জাবেদ, চৌমুহনী পৌরসভার সাবেক মেয়র আক্তার হোসেন ফয়সাল অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ এফসিএ, কাদিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ৪৩ সেকেন্ডের এই বক্তব্য নিয়ে ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কাদিরপুর ইউনিয়নের যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদ হাসান তার ফেসবুকে প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেন,তীব্র নিন্দা জানাই এমন বক্তব্যবের। কাদিরপুর ইউনিয়ন মনে হয়। উনার (উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি) নিজস্ব সম্পত্তি। যারা নৌকায় ভোট দিবে তারা কাদিরপুরে থাকার অধিকার নাই, কাদিরপুর থেকে খেদাই দিবেন, ২-১ টা কাল সাপ আছে তাদের ভোটের দিন চেঁচি দিবেন। এই হচ্ছে উনার বক্তব্য।

ঘটনাস্থলে থাকা কাদিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, এই ভিডিও বানোয়াট। পুরো তথ্য এখানে উঠে আসেনি। বিস্তারিত জানার জন্য আপনি ডা. এবিএম জাফর উল্যাহ সাহেবকে কল দিন। উনি আপনাকে বিস্তারিত বলবেন।

বক্তব্য জানতে নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মিনহাজ আহমেদ জাবেদের প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. এবিএম জাফর উল্যাহর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের নৌকার প্রার্থী মামুনুর রশীদ কিরনের প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আক্তারুজ্জামান আনসারী বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে নৌকার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ায় আমরা তাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সিদ্ধান্ত হয়েছে আমরা সভাপতি সাহেবের বহিষ্কারের সুপারিশ করবো। এছাড়াও আচরণ বিধি লঙ্ঘনের জন্য জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ জমা দিবো।

এবিষয়ে নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের নৌকার প্রার্থী মামুনুর রশীদ কিরন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছি। আমার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হলেন জাফর উল্যাহ সাহেব। আমি উনার সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে তিনি কিভাবে নৌকার বিরুদ্ধে বলেন এটা আমার মাথায় আসেনা। তিনি অত্যন্ত নোংরা ভাষায় কথা গুলো বলেছেন। আমি তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, নোয়াখালী-৩ আসনে মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের মো. মামুনুর রশীদ কিরন (নৌকা), স্বতন্ত্র মিনহাজ আহমেদ (ট্রাক), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের মহি উদ্দিন (চাকা), জাতীয় পার্টির ফজলে এলাহী সোহাগ (লাঙ্গল), জাসদের জয়নাল আবেদিন (মশাল), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক দলের মো. সুমন আল হোসাইন ভূঁইয়া (ছড়ি)। ১৬ ইউনিয়নের এই আসনে মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৪৯টি এবং মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৭ জন।

আরও পড়ুন