![দৈনিক নোয়াখালীর কথা]( https://dailynoakhalirkatha.com/wp-content/uploads/2023/04/logo-noyakhali.png )
স্টাফ রিপোর্টার : ভাসানচরে গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ ঘটেনি। নতুন সিলিন্ডার পেতে পুরান সিলিন্ডারের গ্যাস বাতাসে ছাড়ায় ঘটেছে অগ্নিকাণ্ড। এতে এখন পর্যন্ত পাঁচ রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে আরও চার রোহিঙ্গা।
শুক্রবার (১ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম।
তিনি বলেন, ভাসানচরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি। সিলিন্ডারের গ্যাস ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেওয়ায় এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের মাঝে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণের তারিখ ছিল। এর আগের দিন সকাল সোয়া ৮টার দিকে ৮১ নম্বর ক্লাস্টারের সফি আলম (২৪) নতুন সিলিন্ডার নিতে তার ব্যবহৃত সিলিন্ডারের তলানিতে থেকে যাওয়া গ্যাস ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেন। এসময় পাশের কক্ষের আবদুস শুক্কুরের স্ত্রী আমিনা খাতুন এবং অপর কক্ষে আব্দুল হাকিমের মেয়ে শমসিদা গ্যাসের চুলায় আগুন দিলে সফি আলমের ছেড়ে দেওয়া গ্যাস বাতাসে মিশে তাদের ৩, ৫, ৬, ৭ ও ৮ নম্বর কক্ষসহ বারান্দায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই কক্ষগুলোয় তখন গ্যাসের চুলায় রান্না চলছিল। এতে মুহূর্তের মধ্যে পাঁচটি কক্ষে ও সামনের বারান্দায় আগুন ধরে যায়। আর তখন ৫ শিশুসহ ৯ জন দগ্ধ হন।
মোহাম্মদ ইব্রাহীম আরও বলেন, দগ্ধদের উদ্ধার করে স্থানীয় ২০ শয্যার হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে গুরুতর সাতজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ পাঁচ শিশু রবি আলম (৫), সোহেল (৫), রাসেল (৪), মুবাশিরা (৩) ও রুশমিদা (৩) মারা যায়। এ ঘটনায় সাবধানতা অবলম্বন না করে অবহেলাজনিত তাচ্ছিল্যপূর্ণভাবে সিলিন্ডার থেকে গ্যাস ছেড়ে দেওয়ায় আশ্রয়ন প্রকল্প-৩ এর ৮১ নম্বর ক্লাস্টারের মো. তৈয়বের ছেলে সফি আলমের (২৪) বিরুদ্ধে ভাসানচর থানায় বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে মামলা (নম্বর-২) রুজু করা হয়েছে।
ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাওসার আলম ভূঁইয়া বলেন, গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে ছড়িয়ে পড়া গ্যাসের আগুনে দগ্ধ হয়ে পাঁচ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ নূর বাদী হয়ে ওই মামলা করেন। মামলায় সফি আলমকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। কিন্তু তিনি নিজেই অগ্নিদগ্ধ হওয়ায় তাকে আপাতত গ্রেপ্তার না করে পুলিশের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে তার দুই শিশুসন্তান মারা গেছে। তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে ভাসানচর হাসপাতালে এনে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সুস্থ হলে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পে দায়িত্ব পালনকারী অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের (আরআরআরসি) উপসচিব মো. মাহফুজের রহমান বলেন, এ ঘটনায় ৫ শিশুসহ ৯ জন দগ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পর আমরা এরই মধ্যে প্রতিটি ক্লাস্টারের গ্যাসের সিলিন্ডার ও চুলার ব্যবহারে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছি। যার অংশ হিসেবে ক্লাস্টারে বসবাসকারীদের নিয়ে সচেতনতামূলক বৈঠক, মসজিদের মাইকে সচেতনতামূলক ঘোষণা প্রচার করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :