• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২৮ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট : ২৮ মার্চ, ২০২৪

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের শাস্তির দাবিতে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির আলটিমেটাম

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি, নোবিপ্রবি : পরীক্ষার হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর হস্তক্ষেপ এবং কর্তব্যরত শিক্ষকদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদ ও শাস্তির দাবি জানিয়ে সময় বেঁধে দিয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি। ৩ কার্যদিবসের মধ্যে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেয় সংগঠনটির নেতারা।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মোহাইমিনুল ইসলাম সেলিম স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদলিপিতে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, গত বুধবার পরীক্ষার হলে নোবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা মাহবুব আল হোসেন রাফিকে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে বাধা দেওয়ায় হল পর্যবেক্ষক ও শিক্ষকদের সঙ্গে চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন তিনি। এছাড়া, পরীক্ষার সময় শেষ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের ওই নেতাসহ কয়েকজন এক শিক্ষককে কক্ষে অবরুদ্ধ করেন।

প্রতিবাদলিপিতে আরও অভিযোগ করা হয়, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভুক্তভোগী শিক্ষক, ছাত্র-পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক শাহানা বেগম এবং উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষকদেরকে গালিগালাজ ও কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত দিয়ে কথা বলতে থাকেন, যা কোনভাবেই কাম্য নয়। এছাড়া, বেশ কিছুদিন ধরেই ছাত্রলীগের পদধারী কতিপয় শিক্ষার্থী পরীক্ষার হলসমূহে নিয়মবহির্ভূত হস্তক্ষেপ করছে।

প্রতিবাদলিপিতে শিক্ষকরা আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। অন্যথায় শিক্ষক সমিতি কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয়।

শিক্ষকদের আলটিমেটামের বিষয়ে নোবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম রহমান বলেন, শিক্ষক সমিতি ভিসি স্যারের কাছে অভিযোগ করেছে। ভিসি স্যার যদি কোনো শিক্ষার্থীর অপরাধ পায় এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন, আর জড়িত ছাত্র যদি ছাত্র লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে মোবাইল ফোন নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন মাহবুব আল হোসেন রাফি নামে এক ছাত্রলীগ নেতা। তাকে বাধা দেওয়ার পরও কথা না শোনায় খাতা নিয়ে যান কর্তব্যরত শিক্ষক। এ নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরসহ শিক্ষকদের ওপর চড়াও হন রাফিসহ তার সহযোগীরা। পরে ফটকে তালা দিয়ে আন্দোলনসহ অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে।

রাফি ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ছাত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের অন্তর্গত প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ ছাত্রলীগের উপশাখার সাধারণ সম্পাদক।

পরবর্তীতে পরীক্ষার হলে মোবাইল রাখাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও শিক্ষকদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিসহ পরীক্ষায় দায়িত্বরত শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম রহমান বলেন, পরীক্ষার কক্ষে রাফির সঙ্গে মোবাইল ছিল সত্য, তবে তা বন্ধ ছিল। এ নিয়ে ওই ছাত্রের খাতা কেড়ে নেওয়া শিক্ষকের ঠিক হয়নি। পরে এ নিয়ে ছাত্ররা আন্দোলন করতে চেয়েছিল। আমরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে মীমাংসা করে দিয়েছি।

আরও পড়ুন