• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩০ মে, ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট : ৩০ মে, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘরসহ যা কিছু প্রয়োজন সব করে দেব: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘরসহ যার যা কিছু প্রয়োজন তা দেওয়ার দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরে সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজ মাঠে ত্রাণ বিতরণের পরে এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, বাঁধ দ্রুত মেরামতে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে যে সমস্ত রাস্তাঘাট ও বাঁধ ভেঙ্গে ভেঙে গেছে সেগুলোও মেরামতের কাজ শুরু করে দিয়েছি। যাতে বর্ষার আগেই আমরা বাঁধগুলো নির্মাণ করে জলোচ্ছ্বাস বা পানির হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে পারি।

সরকারপ্রধান বলেন, যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে ইতোমধ্যে আমরা খোঁজ নিতে বসেছি। তাছাড়া আমি আবার সবার সঙ্গে বসবো। যেখানে যেখানে যাদের বাড়িঘর ভেঙেছে, তাদের ঘরবাড়ি করে দেবো, এইটুকু ভরসা আপনারা রাখবেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলোচ্ছ্বাসের কারণে অনেক পুকুরের পানি নোনতা হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় মাছের ঘের ভেসে গেছে। আমাদের ভাগ্য ভালো যে, ধানকাটা শেষ হয়ে গিয়েছিল। তারপরেও তরিতরকারি যা নষ্ট হয়েছে, কৃষক যাতে আবার সেগুলো বপন করতে পারে, সেজন্য বীজ, সার, যা যা লাগে সেগুলোর ব্যবস্থা ইনশাল্লাহ আমি করে দেবো। নতুন উদ্যমে আপনারা যাতে চাষ করতে পারেন, আমি চাই আমাদের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী থাকবে না। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা পদক্ষেপ নিই। আর সেই ব্যবস্থা আমরা করে দেবো।

ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় দলীয় নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

এবারের ঝড়-জলোচ্ছ্বাস খুবই অস্বাভাবিক হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি সাইক্লোন শেল্টার করেছি, সেখানে মানুষ আশ্রয় পেয়েছে। যারা গৃহহীন, তাদের দুর্যোগ সহনীয় ঘর করে দিয়েছি। যে কারণে মানুষ অন্তত আশ্রয়ের জায়গা পেয়েছে। পশুপাখি আশ্রয়ের ব্যবস্থা পেয়েছে।

‘আমরা চাই দুর্যোগ থেকে এই এলাকার মানুষ যেন মুক্তি পায়। আমরা জানি, এই এলাকা সবসময়ই দুর্যোগপ্রবণ।’

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জীবনের যে চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা তার ব্যবস্থা করার জন্য যা যা দরকার আওয়ামী লীগ সরকার তা করে যাচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি, সেখান থেকে বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ আর বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। মায়ের নামে আমরা বৃত্তির টাকা পাঠাই। যারা একেবারে হতদরিদ্র বিনা পয়সায় খাদ্য সাহায্য দিই। এখন দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, যারা কিনতে পারে না তাদের জন্য পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি। অল্প টাকায় চাল, ডাল, তেল কিনে নিতে পারবে সেই ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিয়েছি। দেশের মানুষ যেন না খেয়ে কষ্ট না পায়, সেটিই আমাদের লক্ষ্য। পাশাপাশি মানুষের সার্বিক উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

রাস্তাঘাটের উন্নয়নের জন্য সব জায়গায় খুব সহজেই যাওয়া যায় উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আজকে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে এই পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পাঁচ-ছয় ঘন্টার মধ্যে পৌঁছানো যায়। আগে কিন্তু আসা যেতো না। পাশাপাশি গ্রামেগঞ্জে রাস্তাঘাট করে দিয়েছি। এই দক্ষিণাঞ্চল সবচেয়ে অবহেলিত ছিল।

এই অঞ্চলে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে বলেই এই অঞ্চলের উন্নয়ন হয়েছে। এর আগে অনেকেই ছিল, কেউ দৃষ্টি দেয়নি। এই অঞ্চলের মানুষ প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে। প্রতিনিয়ত জীবন যুদ্ধে লিপ্ত হয়। আজ অন্তত এটা বলতে পারি, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসবে কিন্তু সেটিকে মোকাবিলা করে মানুষের জীবন মান রক্ষা করা সেটিই আমাদের লক্ষ্য।

এদিন বেলা ১১টার পর হেলিকপ্টারে পটুয়াখালীর উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা পৌনে ১টার দিকে তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার খেপুপাড়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছেই হেলিপ্যাডে অবতরণ করে।

উল্লেখ্য, গেল রোববার দিবাগত রাতে বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলে তাণ্ডব চালায় প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল। মধ্যরাতে ঝড়ের সাথে জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যায় খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুরের বেশ বিস্তীর্ণ অঞ্চল। শুধু বরিশাল বিভাগেই মৃত্যু হয় ১৯ জনের।

আরও পড়ুন