![দৈনিক নোয়াখালীর কথা]( https://dailynoakhalirkatha.com/wp-content/uploads/2023/04/logo-noyakhali.png )
উপজেলা প্রতিনিধি, সোনাইমুড়ি : সোনাইমুড়ি উপজেলার দীঘিরজান-বজরা বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। ব্যস্ততম এ সড়কের ছয় কিলোমিটারে সারিবদ্ধভাবে অর্ধশতাধিক বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই কার্পেটিং করেছে কর্তৃপক্ষ। ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সড়কের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৪ সালের জুনে। সড়কের মাঝখানে থাকা বিদ্যুতের খুঁটির কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন যানবাহনের চালকরা।
সওজ কর্তৃপক্ষের দাবি, খুঁটি অপসারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা দেয়া হলেও গত তিন মাসেও অপসারণের উদ্যোগ নেয়নি। তবে মান বজায় রেখেই খুঁটি সরানোর পর পুনরায় কার্পেটিং করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা। আর চলতি মাসের মধ্যেই খুঁটি সরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ সড়ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সেনবাগ উপজেলার সেনবাগ দক্ষিণ বাজার থেকে সোনাইমুড়ি উপজেলার দীঘিরজান থেকে বজরা বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ প্রায় শেষের পথে। সওজ বিভাগের অধীনে নির্মিত এ সড়কের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের জুনে। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সড়কের মাঝখানে থাকা বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণে প্রায় ৭০ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে দীঘিরজান থেকে বজরা বাজার পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার সড়কে খুঁটি অপসারণ করেনি পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এজন্য খুঁটি রেখেই বাধ্য হয়ে কার্পেটিং করতে হয়েছে সড়ক বিভাগকে। নির্দিষ্ট সময়ে উন্নয়নকাজ শেষ করার লক্ষ্যে মূলত কার্পেটিং করা হয়।
এ বিষয়ে নোয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার বলেন, ‘খুঁটি অপসারণের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে দেয়া বরাদ্দের টাকা বুঝিয়ে দিয়েছি। তাদের দেরি হওয়ায় বাধ্য হয়ে সড়ক কার্পেটিং করতে হয়েছে। তবে খুঁটি সরানোর পর তৈরি হওয়া গর্তে সঠিকভাবেই কার্পেটিং করা হবে। সেক্ষেত্রে মান কোনোভাবেই নষ্ট হবে না।’ এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘সঠিক সময়ে খুঁটি অপসারণ না করায় কাজ করতে বেগ পেতে হয়েছে।’
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়কের মাঝখানে সারি সারি বিদ্যুতের খুঁটি। ছয়কিলোমিটার সড়কে এমন খুঁটি রয়েছে অর্ধশতাধিক। গত তিন মাসের বেশি সময়েও খুঁটি সরানো হয়নি। ফলে ব্যস্ততম এ সড়কে দিনে ও রাতে ঘটছে দুর্ঘটনা। আহত হয়েছেন অনেকে। বিকল হচ্ছে যানবাহন। প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও পথচারীদের। সড়কের বাঁকে, বাজারে কিংবা বিভিন্ন ব্রিজে ওঠানামার স্থানে এমন খুঁটি রয়েছে মাসের পর মাস। সড়ক প্রশস্ত করার সময় খুঁটি অপসারণ না করায় সড়কের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
বেলাল নামে এক অটোরিকশাচালক বলেন, ‘১০-১৫ দিন আগে দীঘিরজান বাজারের পশ্চিম দিকে আবুল কোম্পানির বাড়ির সামনে খুঁটির কারণে একটি দুর্ঘটনা ঘটে। সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় এক চালকের মাথা জখম হয়।
নিজাম উদ্দিন বাহার নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, শুধু আবুল কোম্পানির বাড়ির সামনে নয়, প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনা ঘটছে। তিন মাসের বেশি সময় ধরে এভাবে সড়কের ওপর বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে। ঠিকাদারকে বলা হলেও কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহাবুবুর রহমান জানান, খুঁটি রেখে সড়ক প্রশস্ত করার কারণে কাজের মানও নষ্ট হয়েছে। যখন খুঁটিগুলো অপসারণের কাজ করবে, তখন খুঁটির স্থানে যে গর্ত হবে সেগুলোতে কার্পেটিং করলে গুণগত মান ভালো থাকবে না। নিয়ম অনুযায়ী সড়ক প্রশস্ত করার আগেই বিদ্যুতের খুঁটিগুলো অপসারণ করা উচিত ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা করেনি। এতে বোঝা যায় পুরো কাজই অপরিকল্পিতভাবে হয়েছে।
তবে নির্দিষ্ট সময়ে খুঁটি অপসারণ না করার বিষয়ে নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘সময়মতো টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে, ঠিকাদারও নিয়োগ করা হয়েছে। টেকনিক্যাল কিছু সমস্যার কারণে সময় লেগেছে। তবে চলতি মাসের মধ্যে খুঁটি অপসারণে কাজ করা হবে।’ কাজ করার সময় যানবাহন ও স্থানীয়দের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখার আশ্বাস দেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :